নিজস্ব সংবাদদাতা | | Editor: শ্যামশ্রী সাহা ১৩ মার্চ ২০২৪ ২৩ : ৫৭

২০২৩-এর ১২ জুন। ‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর গত সিজন। বিশেষ পর্বের শুট। রাজারহাটের বিশাল স্টুডিওয় এক ঝাঁক সাংবাদিক। তাঁকে না জানিয়েই ক্যামেরার সামনে তাঁর জন্মদিনের আগাম আয়োজন। শুভেচ্ছা জানাতে সেটে হাজির রাজ চক্রবর্তী। সেদিন আজকাল ডট ইনকে তিনি প্রথম বলেছিলেন, ‘‘আমার স্বপ্ন, মিঠুন চক্রবর্তীকে নিয়ে ছবি বানাব। মহাগুরু তাতে ফাটিয়ে অ্যাকশন করবেন। দাদা অনুমতি দিলে একটা ছবি বানাবই।’’



কাট টু ২০২৪-এর জানুয়ারি। টলিউডে জোর জল্পনা, রাজ-গুরু যোগ আসন্ন। বিধায়ক-প্রযোজক-পরিচালক তাঁর স্বপ্নপূরণ করতে চলেছেন। ‘এমএলএ ফাটাকেষ্ট ৩’ আনছেন। জল্পনা কিছুটা হলেও সত্যি। রাজ মিঠুনকে নিয়ে ছবি বানাচ্ছেন। তবে অ্যাকশন নয়, নিটোল পারিবারিক ছবি। বাবা-ছেলের গল্প। মিঠুন-ঋত্বিক চক্রবর্তী বাবা আর ছেলে। মিঠুনের স্ত্রী অনসূয়া মজুমদার। প্রযোজনায় এসভিএফ।

বুধবার সকাল থেকে সাজো সাজো রব। শেষ মুহূর্তের চূড়ান্ত ব্যস্ততা। দেওয়ালে পেরেক পোঁতার ঠকঠক আওয়াজ। স্টুডিও চত্বরে ছোট ছোট তাঁবু খাটিয়ে তাতে নানা ব্যবস্থা। কোথাও চায়ের, কোথাও জলখাবারের। খোলা আকাশের নীচে টেবিল-চেয়ারে বসে পরিচালক শেষ মুহূর্তে সব মিলিয়ে দেখে নিচ্ছেন। একটু দূরে দাঁড়িয়ে লাল টুকটুকে মেকআপ ভ্যান। গায়ে সাঁটা সাদা কাগজে বড় বড় হরফে লেখা ‘দাদা’। একটু এগোতেই মহাগুরুর সাজানোগোজানো সংসার। ছিমছাম বসার ঘর, খাওয়ার জায়গা, ঠাকুরঘর মিলিয়ে তাঁর সুখী গৃহকোণ। দরজার বাইরে নেমপ্লেট ‘বসু’। ঘর সাজানোর কাজও শেষের পথে।



এর মধ্যেই পরপর দুটো দুধসাদা মারুতি। একটিতে নীল বাতি লাগানো। ‘রাজ’সভায় পা রাখলেন মিঠুন চক্রবর্তী। তখন তাঁর পরনে ধূসর শার্ট। গলায় সাদা উত্তরীয়। মাথায় কালো লেসের টুপি। চোখে রোদচশমা। ব্যস্তসমস্ত রাজ সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে অ্যাপায়ন জানাতে সেখানে হাজির। তাঁর সঙ্গে আগামী ছবির প্রথম দিনের শুটিং করতে সেটে পা ‘মহাগুরু’র। মেকআপ ভ্যান থেকে বেরোতেই সাজবদল। সাদা কুর্তা, কালো প্যান্ট চেনা দায় তাঁকে। এদিন তাঁর সহ-অভিনেতা অনসূয়া মজুমদার, সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়, সোহিনী সেনগুপ্ত, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী প্রমুখ। রাজ অ্যাকশন বলতেই ক্যামেরার বন্দি নানা বসু পরিবারের সাংসারিক কিছু মুহূর্ত। বাড়ির কর্তার দুই হাতে গিন্নির এবং নিজের খাবার বেড়ে টেবিলে আনা। হুইলচেয়ারে বসে অনুসূয়ার ঠাকুরঘরে প্রণাম। ঘরোয়া ভঙ্গিতে শাড়ি, ঘাড়ের কাছে হাতখোঁপা, কপালে সিঁদুরের টিপ, শাঁখা-পলায় চিরন্তন মাতৃরূপ তাঁর। ভোল বদলে মিঠুনের সাদা কুর্তা ছেড়ে নীল টি শার্ট পরা... অনেক কিছু।

মাঝে বিরতি। ফের বাংলা ছবিতে দাপটের সঙ্গে তিনি। কেমন লাগছে ‘মহাগুরু’র? কী বলছেন রাজ? 



পরিচালকের কথায়, ‘‘এসভিএফের ১৬৫ তম ছবির শুট। অনেক দিন পরে প্রযোজনা সংস্থার জন্য ছবি বানাচ্ছি। পারিবারিক গল্প। অনেক দিন পরে সেট বানিয়েছেন মৃদুল-শাশ্বতী। মানসের ক্যামেরা। অসম্ভব ভাল আলোর কাজ। মিঠুনদা খুব খুশি। বারবার করে মানসকে জড়িয়ে ধরে বলছেন, ক্যয়া বাত ক্যয়া বাত!’’ ‘মহাগুরু’কে দেখে বোঝার উপায় নেই, তিনি কিছুদিন আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। বাকিদের থেকেও যেন বেশি চনমনে। সবার উৎসাহকে ছাপিয়ে গিয়েছে তাঁর উৎসাহ। তাঁর অভিনয়, তাঁর খিদে বুঝিয়ে দিয়কেষ্ট ৩’ আনছেন।